সহপাঠীকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ছুরিকাঘাত


কিশোরগঞ্জে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে (২১) ছুরিকাঘাত করে পালিয়েছে একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র মো. ইমরান। গতকাল শনিবার দুপুরে শহরের খরমপট্টি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই ছাত্রী তখন নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে রিকশা দিয়ে বাসায় যাচ্ছিলেন। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, ওই ছাত্রীর মুখের বাঁ পাশে ও ঘাড়ে ধারালো কিছুর আঘাত রয়েছে। ঘাড়ে ২০টির মতো সেলাই দেওয়া হয়েছে। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাইনুল হাসান জানান, আহত মেয়েটির অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে। বিবিএর ছাত্র মো. ইমরান শহরের নগুয়া এলাকার বাসিন্দা রতন মিয়ার ছেলে। পুলিশ বলছে, ইমরান পালিয়ে গেলেও তার বাবা ও মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত ছাত্রীর বাবা কিশোরগঞ্জ আদালতের একজন আইনজীবী। মেয়েটির মা হাসপাতালে এ প্রতিনিধিকে জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে তাঁর মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল ইমরান। তিনি নিজে তাকে (ইমরান) বুঝিয়েছেন যেন এসব না করে। কারণ তাঁর মেয়ে ইমরানকে পছন্দ করে না। তাদের মধ্যে কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল কি না—এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কখনো তাঁর মেয়ের সঙ্গে ইমরানের প্রেম ছিল না। বরং ইমরান তাঁর মেয়েকে কয়েক বছর ধরে উত্ত্যক্ত করত।

বিকেলে হাসপাতালে গিয়ে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেয়েটি কিশোরগঞ্জ শহরের ঈশা খাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে এলএলবির শেষ বর্ষে পড়ছেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি জেলার তাড়াইল উপজেলায়। তবে শহরের হারুয়া এলাকায় বসবাস করেন।



পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে ওই ছাত্রী তাঁর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে রিকশায় করে বাসায় ফিরছিলেন। রিকশাটি যখন খড়মপট্টি এলাকায় পৌঁছে তখন আগে থেকে ওত পেতে থাকা ইমরান জোর করে তাঁর রিকশায় উঠে পড়ে। তখন দুজনের মধ্যে ঝগড়া ও কিছুটা ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় ছুরি বা ধারালো কিছু দিয়ে মেয়েটির মুখের বাঁ পাশে ও ঘাড়ে বেশ কিছু আঘাত করে পালিয়ে যায় ইমরান। ঘটনার আকস্মিকতায় প্রত্যক্ষদর্শীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই সে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত মেয়েটিকে স্থানীয় লোকজন হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে গিয়ে হামলার শিকার ওই ছাত্রী, এলাকাবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে।

পুলিশ জানিয়েছে, ইমরানকে ধরতে তারা বিভিন্ন জায়াগায় অভিযান চালাচ্ছে। এ ছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার বাবা র
তন মিয়া ও মা কুমকুম বেগমকে আটক করা হয়। এ বিষয়ে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ইমরানকে আসামি করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন।

কথা হলে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ওসি আবু শামা মো. ইকবাল হায়াত বলেন, ওই ছাত্রী ও ইমরান একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেন। সহপাঠী হয়েও ইমরান এমন কাজ করল; তাকে খোঁজা হচ্ছে। আশা করি খুব দ্রুত ধরা যাবে তাকে।

Comments

Popular posts from this blog

পদোন্নতি পাচ্ছেন ১৭০ সহকারী শিক্ষক

রোবট সোফিয়ার পেছনে বাংলাদেশ খরচ করছে ১২ কোটি টাকা?